করোনা মহামারীর মধ্যেই চলছে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের প্রস্তুতি। কমিটিতে জায়গা পেতে ক্যাসিনোকা-ে জড়িতসহ বিতর্কিত নেতারাই বেশি দৌড়ঝাঁপ করেছেন। যে কোনো মূল্যে পদ পেতে তারা স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে কেন্দ্রীয় নেতাদের বাড়িতে বাড়িতে ধরনা দিচ্ছেন।
জানা গেছে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা দিয়ে শুদ্ধি অভিযান চলাকালে যেসব নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল তাদের অনেকের নাম আসছে খসড়া কমিটিতে। শুধু তা-ই নয়, গত ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে যারা দলীয় কমান্ড না মেনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন তারাও মহানগর কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ পাচ্ছেন বলে আলোচনা চলছে।
গত কমিটির দুই নেতা আমাদের সময়কে জানান, ক্যাসিনো কর্মকা-ে যুক্ত থাকার অভিযোগ ছিল এমন দুই নেতাকে মহানগরের কমিটিতে রাখার প্রক্রিয়া চলছে। শুধু তা-ই নয়, চাঁদাবাজি ও পদবাণিজ্যের অভিযোগ থাকা অনেকেই প্রভাব খাটিয়ে নগর কমিটিতে পদ পেতে জোর লবিং করছেন। গত কমিটির দুই নেতা মনে করেন, চূড়ান্ত কমিটিতে বিতর্কিত ও বিদ্রোহীরা ঢুকে পড়েন তা হলে পরোক্ষভাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শুদ্ধি অভিযানের বিপরীতে অবস্থান নেওয়ার শামিল হবে।
গেল বছরের ৩০ নভেম্বর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ ঘোষণার পর চলতি বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত কাউন্সিলরদের পদ না দিয়ে যারা মনোনয়ন পায়নি এমন ত্যাগী নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করতে নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। বর্তমানে ওই নির্দেশনা উপেক্ষা করেই চলছে মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের প্রস্তুতি।
এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহম্মেদ মন্নাফি আমাদের সময়কে
বলেন, ‘কাউন্সিলরদের নগরের কমিটিতে না রাখার বিষয়ে বলা হয়েছিল এটা সত্য। আমরা দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের বাইরে কিছু করব না। তবু কিছু যোগ্য ও দক্ষ ব্যক্তিকে তো না রেখে পারাও যায় না। যদি তেমন কাউকে রাখতেই হয় তবে নেত্রীর অনুমোদন নিয়েই করা হবে। কারণ সংগঠন চালাতে গেলে অনেক কৌশল অবলম্বন করতে হয়, অনেককে কমিটিতে নিতে হয়।’
বিতর্কিত নেতারা কমিটিতে আসতে জোর তদবির চালাচ্ছেনÑ বিষয়টি স্বীকার করে আবু আহম্মেদ মন্নাফি বলেন, ‘যতই তদবির চলুক আমরা কোনো বিতর্কিত লোককে নগর কমিটিতে জায়গা দেব না। ব্যক্তিগতভাবে আমি এই বিষয়ে কঠোর থাকব। কেউ যদি চাপ প্রয়োগ করে এ রকম কাউকে কমিটিতে আনতে চায় তা হলে সবাইকে জানিয়ে দেব। এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেব না।’
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান আমাদের সময়কে বলেন, কমিটি গঠনের প্রস্তুতি আছে। সামনে শোকের মাস। আগস্টের পর আমরা খসড়া কমিটি নেত্রীর কাছে জমা দেব। কাউন্সিলর বা বিতর্কিতরা কোনোভাবেই কমিটিতে জায়গা পাবে না।
Leave a Reply